ডিম বিক্রি শুরু করেছি, সার্টিফিকেটগুলো ফেলে দেবো’

অনলাইন ডেস্ক – কিডনি রোগে আক্রান্ত সাগরের বাবাকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হয়। মাসে মাসে স্কুলের ফি আসে ছোট ভাইবোনদের। দিতে হয় পড়াশোনার খরচ, পরিবার চালানোর খরচ। সবই আসে ডিমের ভ্যানগাড়ি থেকে। প্রতিদিন আয় প্রায় ৫০০ টাকা।

বিষণ্ন মুখে ভ্যানগাড়িতে বসানো চুলায় ডিম সিদ্ধ করতে করতে আল-জাজিরার রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলছিলেন সাগর কুমার। দিল্লির কাছে একটি উপশহরের সড়কে প্রতিদিন ডিম বিক্রি করেন উত্তর প্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাশ করা এই যুবক। তিনি বেকারত্বের তাড়া খাওয়া ভারতের তিন কোটি ভাগ্য বিড়ম্বিত যুবকদের একজন।

সাগর বলেন, ‘সরকারি চাকরির জন্য অনেকগুলো ইন্টারভিউ দিয়েছি। কোনটাতেই হয়নি। এক বছর হলো ডিম বিক্রি শুরু করেছি। আরও কয়েকটি ইন্টারভিউয়ের ফলাফলেও চাকরি না হলে সার্টিফিকেটগুলো ফেলে দেবো। বিবিএ পাশ করে যদি রাস্তায় ডিম বিক্রি করতে হয়, তাহলে কী হবে ওসব ডিগ্রি দিয়ে?’

আল-জাজিরা জানায়, ভারতে বর্তমানে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হলেও বেকারত্বের হার গেলো ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মোদি ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাজেয়াপ্ত করার ধাক্কায় চাকরি হারান দেশটির প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ।

‘ডিম বিক্রি শুরু করেছি, সার্টিফিকেটগুলো ফেলে দেবো’

সম্প্রতি ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে ৬৩ হাজার ক্লিনার ও লাইন পরিচর্যাকারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে আবেদন পড়ে এক কোটি ৯০ লাখ। ভারত সরকারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট বেকার যুবকের সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লাখ।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে তামিলনাড়ু সংসদ সচিবালয়ে ঝাড়ুদার ও স্যানিটারি কর্মী পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এতে ঝাড়ুদার পদে ১০ জন এবং স্যানিটারি কর্মী পদে ৪ জনের পোস্ট খালি ছিল। কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা না চাইলেও সে পদে আবেদন করেন ইঞ্জিনিয়ার ও এমবিএ ডিগ্রিধারীরা।